ভূমিসেবায় সন্তুষ্টির মাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে - ভূমি উপদেষ্টা

ভূমিসেবায়  সন্তুষ্টির মাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে - ভূমি উপদেষ্টা

 

ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে ভূমি সেবাগ্রহীতাদের সন্তুষ্টির মাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভূমি সেবায় ডিজিটাল রূপান্তর অপরিহার্য। সন্তোষজনক সেবা নিশ্চিতে কর্মকর্তাদের ‘সার্ভে-এন্ড-সেটেলমেন্ট’ প্রশিক্ষণের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে এবং তা প্রারম্ভিক পর্যায় সম্পন্ন করতে হবে।

 

গতকাল রাজধানীর ভূমি ভবনের সেমিনারকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘ভূমি মেলা ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনূস।

 

উপদেষ্টা বলেন, ভূমিসেবায় অনলাইন সংস্করণ যুক্ত হওয়ায় দৈনিক গড়ে ১০-১২ কোটি টাকা রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে। সুষ্ঠু জরিপ কার্য সম্পাদনের মাধ্যমে ভূমিসেবায় নতুন মাত্রা যুক্ত হবে, আর এ জন্য প্রশিক্ষণের গুরত্ব অনস্বীকার্য।  

 

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, সংস্কার ও অর্জন বিভিন্ন শ্রেণির নাগরিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর ও খতিয়ান সেবাসহ সংশ্লিষ্ট সব সেবাকে  শতভাগ অনলাইন এবং পেমেন্ট প্রক্রিয়াকে ক্যাসলেস করা হয়েছে। বিদ্যমান প্রযুক্তিনির্ভর অটোমেটেড ভূমিসেবাসমূহ সেবাগ্রহীতাদের নিকট জনপ্রিয় করাসহ ভূমি উন্নয়ন কর আদায় তথা রাজস্ব ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিনের এই মেলায় ১৯ স্টলে ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা প্রদান করা হবে।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, গত ১৫ বছর বলা হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ অথচ বাস্তবে তা হয়েছে কিছু ডিজিটাল দ্বীপ’ বা আইল্যান্ড। তবে এ আইল্যান্ডগুলোর মধ্যে ইন্টারকানেক্টিভিটি তৈরি করা হয়েছে।

 

ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিচ্ছিন্ন ডিজিটাল সার্ভিস এখন একটি জায়গায় পাওয়া যাবে; এর মাধ্যমে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন গতি পাবে। এ ট্রান্সফরমেশনকে দুইভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। একটি হলো মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলোর ট্রান্সফরমেশন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে নাগরিক সেবা নামে একটি প্লাটফর্ম। এই নাগরিক সেবা নামটি প্রধান উপদেষ্টা নির্ধারণ করেছেন।

ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব আরো বলেন, ভূমি জরিপ কাজ জিপিএস ও জিও ফেন্সিং প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন  হবে।  জমির মালিক চাইলে জরিপ কার্য গুগল আর্থে দেখতে পারবে। ভবিষ্যতে এই জরিপের সাথে ভূমির মালিকানার ম্যাপিং, কোনো মামলা আছে কি না থাকলে মামলার বর্তমান অবস্থা ও রাজস্ব আদায়ের তথ্য সংযুক্ত থাকবে। অর্থাৎ একটা সিঙ্গেল গেটওয়েতে বসে ভূমির ডিজিটাল ম্যাপের সাথে তার মালিকানাসহ বর্তমান অবস্থা দেখা যাবে। আর এই কাজটি করতে পারলে সেটিই হবে প্রকৃত ডিজিটালাইজেশন। 

 

 সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এজেএম সালাউদ্দিন নাগরী, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) মুহম্মদ ইবরাহিম। আলোচনার শুরুতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো: এমদাদুল হক চৌধুরী ভূমি মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম উপস্থাপনা করেন।

 

আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও অতিথিবৃন্দ ভূমি জাদুঘর ও মেলার স্টল পরিদর্শন করেন।

 

 

সূত্রঃপিআইডি